weather

খুলনা বরিশালের দিকে ধেয়ে আসছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’

আরব সাগরে গত শনিবার থেকে গত শনিবার থেকে ধীরে ধীরে শক্তি অর্জন করেছে ঘূর্ণিঝড় ‘তেজ’। এরই রেশ ধরে মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে ভারত-বাংলাদেশের আকাশে মেঘের ঘনঘটা এসেছে। বঙ্গোপসাগরও উত্তাল হয়ে উঠেছে। সাগরের পশ্চিম-মধ্য এলাকায় সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপটি পরিণত হয়েছে নিম্নচাপে। যা সোমবারের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। আগামী বৃহস্পতিবার এটি ‘হামুন’ হয়ে দেশে আঘাত হানতে পারে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলেন, নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে ‘হামুন’। সব নির্দেশক বলছে, এটি সাধারণ একটি ঘূর্ণিঝড় হতে পারে। তিনি আরও বলেন, সতর্ক সংকেত ৫, ৬ ও ৭-এর মধ্যে থাকারই সম্ভাবনা বেশি। মহা বিপৎসংকেত জারির কোনো সম্ভাবনা আমরা এখনও দেখছি না।

আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, সোমবার নাগাদ গভীর নিম্নচাপটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। নিম্নচাপ নিকটবর্তী এলাকায় সাগার উত্তাল রয়েছে।

আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান বলেন, এখন আরব সাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় রয়েছে। সেটি দুর্বল হলে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সিস্টেমটি সবল হবে। তবে বঙ্গোপসাগরেরটি খুবই সাধারণ (মার্জিনাল) একটি ঘূর্ণিঝড় হতে পারে। তিনি বলেন, এটি এখন খুবই ধীর গতিতে এগোচ্ছে। তবে হঠাৎ এগোনোর গতি বেড়ে যেতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, গত মে মাসে প্রথম ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ দুর্বল হয়ে বাংলাদেশে প্রভাব ফেলে। গত বছরও আরেকটি ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ বাংলাদেশে উঁচু জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাসের মাধ্যমে প্রভাব ফেলে। ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ সৃষ্টি হলে, এটি হবে বছরের দ্বিতীয় ঘূর্ণিঝড়।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা থেকে সাধারণত বিভিন্ন সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়গুলোর আগাম নাম ঠিক করা হয়। ‘হামুন’ নামটি দিয়েছেন ইরানের আবহাওয়াবিদরা। পারসি শব্দ ‘হামুন’ মানে ছোট্ট দৈত্য।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, নিম্নচাপটি পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯২৫ কিলোমিটার, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৩৫ কিলোমিটার, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৮৫ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। এ সময় সব সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। নিম্নচাপটি এখন উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোলেও সোমবার থেকে বদলাতে পারে চলার পথ। এটি উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে মোড় নিয়ে বাংলাদেশের স্থলভাগের দিকে মুখ ঘোরাতে পারে।

নিম্নচাপের অগ্রভাগে থাকা মেঘমালা বাংলাদেশে ঢুকতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে উপকূলীয় জেলায় বৃষ্টি বেশি হতে পারে। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা বিভাগে বৃষ্টি শুরু হয়েছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়টি খুব বেশি শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন না আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। এটি একটি সাধারণ ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আগামী বৃহস্পতিবার খুলনা-বরিশাল ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

 

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button